‘স্যার, সরকার স্কুল করে না কেন?’ প্রশ্নটা এল পেছন থেকে, রিকশায় ওঠার মুখে। চিনি না ভদ্রলোককে। তিনি নিজের প্রশ্ন যখন ব্যাখ্যা করতে থাকলেন তখন পরিষ্কার হলো আরও অনেকের মতো তিনিও একজন দিশেহারা অভিভাবক। সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাবেন। চারদিকে অনেক স্কুল আছে, কিন্তু ভালো নির্ভরযোগ্য স্কুলের অভাব খুব, তাতে প্রতিযোগিতা এত বেশি যে সব মিলিয়ে তিনি থই পাচ্ছেন না। শিক্ষার যেমন বহু ধারা, তেমনি মানের ক্ষেত্রেও আকাশ-পাতাল, ব্যয়ের ক্ষেত্রেও তাই। কী করবেন অভিভাবকেরা? তাঁর প্রশ্ন, সারা দেশে একই মানের স্কুল প্রতিষ্ঠায় সরকারের ভূমিকা কেন থাকবে না?‘স্যার, সরকার স্কুল করে না কেন?’ প্রশ্নটা এল পেছন থেকে, রিকশায় ওঠার মুখে। চিনি না ভদ্রলোককে। তিনি নিজের প্রশ্ন যখন ব্যাখ্যা করতে থাকলেন তখন পরিষ্কার হলো আরও অনেকের মতো তিনিও একজন দিশেহারা অভিভাবক। সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাবেন। চারদিকে অনেক স্কুল আছে, কিন্তু ভালো নির্ভরযোগ্য স্কুলের অভাব খুব, তাতে প্রতিযোগিতা এত বেশি যে সব মিলিয়ে তিনি থই পাচ্ছেন না। শিক্ষার যেমন বহু ধারা, তেমনি মানের ক্ষেত্রেও আকাশ-পাতাল, ব্যয়ের ক্ষেত্রেও তাই। কী করবেন অভিভাবকেরা? তাঁর প্রশ্ন, সারা দেশে একই মানের স্কুল প্রতিষ্ঠায় সরকারের ভূমিকা কেন থাকবে না?
খুবই সংবিধানসম্মত, যৌক্তিক, ন্যায়সংগত প্রশ্ন।
সরকার বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেয়, ডাক্তাররা ঢাকার বাইরে কাজ না করলে চাকরি থাকবে না। এই হুমকি দিয়ে কোনো কাজ হয়নি, হবে না। শুধু ডাক্তার নন, সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, শিক্ষক-প্রায় সবারই প্রবণতা ঢাকায় থাকার। ঢাকায় পোস্টিং না নিতে পারলে তাঁদের দুটি বাড়ি নিতে হয়। একটি কর্মস্থলে নিজে থাকার, আরেকটি ঢাকায় সন্তানসহ পরিবারের থাকার জন্য। এর কারণ কী? কেন সবাই এই দূষিত, প্রায় অচল, বসবাসের অযোগ্য শহরে আসতে চায়? খুঁজলে অন্যতম যে কারণ পাওয়া যাবে, তা হলো সন্তানের জন্য স্বীকৃত মানসম্মত শিক্ষা। এ ছাড়া অবশ্যই পরিবারের চিকিৎসা, সেখানেও দৃশ্যপট একই।
আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সন্তানকে লেখাপড়া শেখানো দেশের সীমিত আয়ের সব শ্রেণির মানুষের কাছে এখন প্রধান অগ্রাধিকার। ধারকর্জ করে, আয় বাড়ানোর নানা পথ অনুসন্ধান আর অসম্ভব পরিশ্রম করে সন্তানকে পড়ানোর জন্য তাঁরা প্রাণপাত করেন। দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের মধ্যেও চেষ্টার কমতি নেই। হয়তো তাঁদের ভেতরে প্রবল বিশ্বাস, এই শিক্ষা দিয়েই বর্তমান দুষ্টচক্র থেকে মুক্তি সম্ভব হবে। এই সম্মিলিত ইচ্ছা যেকোনো দেশের জন্য বড় ঘটনা, রাষ্ট্রের দায়িত্ব এর বাস্তবায়নে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। কিন্তু কয়েক দশক ধরে রাষ্ট্রীয় নীতি হলো শিক্ষা যে সব নাগরিকের অধিকার এবং তা নিশ্চিত করা যে রাষ্ট্রের দায়িত্ব, তা থেকে ক্রমাগত সরে এসে শিক্ষা খাতকে একটি বড় আকারের শপিং মল বানানো। সেখানে বড়-ছোট নানা দোকান, কিনে নিতে হবে শিক্ষা। আর শিক্ষকেরা হবেন দোকানের কর্মচারী, বিক্রেতা।
কর্তাব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রকে উন্নয়নের শীর্ষ মডেল বলেই গণ্য করেন। সেখানে যে দেশের এক মাথা থেকে আরেক মাথায় দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে পাবলিক বা সর্বজনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু আছে, তা কি তাঁদের চোখে পড়ে না? ওই সব স্কুলের শিক্ষার্থীরা গাড়ি নিয়ে ভিড় জমায় না। একই চেহারার স্কুলবাস পুরো উত্তর আমেরিকায়। তাতেই সবাই আনন্দে চলাফেরা করে। সেখানেও ব্যয়বহুল প্রাইভেট স্কুল আছে। কিন্তু তা সংখ্যায় খুবই কম, মূলধারার স্কুলে আসনের অভাবে কারও সেখানে গিয়ে ভিড় জমাতে হয় না। ইউরোপের সব দেশেই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় শিক্ষাই মূলধারা। অনেক দেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ও বাণিজ্যিক বা প্রাইভেট নেই। রাষ্ট্রই শিক্ষার পুরো দায়িত্ব নিয়েছে। এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার বহু দেশে একই চিত্র। বাংলাদেশে যে অনুপাতে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে, তার তুলনা বিশ্বে খুব কমই পাওয়া যাবে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায়ও বাংলাদেশেই শিক্ষার বাণিজ্যিক নৈরাজ্য সবচেয়ে বেশি।
দেশের শিক্ষা অবকাঠামো নির্মাণে সরকারের ভূমিকা খুবই গৌণ। বড় বড় বহু কলেজ ব্রিটিশ আমলে সমাজের বিভিন্ন গুণী ব্যক্তির অর্থে, শ্রমে, জমিতে, স্বেচ্ছাসেবায় নির্মিত হয়েছে। এ রকম মানের স্কুল-কলেজ নির্মাণ তো দূরের কথা, রাষ্ট্রীয় নীতি হলো দায়িত্ব থেকে দূরে সরে যাওয়া। ফলে একটি অভিন্ন মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বদলে গড়ে উঠেছে বহু ধারা ও নৈরাজ্য। বাংলাদেশের শিক্ষাবিষয়ক সমীক্ষার সর্বশেষ সরকারি দলিল অনুযায়ী দেখা যায়, শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ভূমিকার অনুপাত অবিশ্বাস্য মাত্রায় কম। দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার, এর মধ্যে সরকারি ৬৪ হাজার, ৫০ শতাংশের কিছু বেশি। এর মধ্যে একটি বিরাট অংশ সরকার নিজে তৈরি করেনি, পরে নানা তদবিরে জাতীয়করণ করেছে। মাধ্যমিক স্কুল আছে ২০ হাজার ৪৪৯টি, এর মধ্যে সরকারি প্রায় ৯০০, শতকরা ৫ ভাগের কম। এই বেসরকারি স্কুলগুলোর মধ্যে অনেকগুলো স্বীকৃতিপ্রাপ্ত, কিন্তু শিক্ষকদের সরকারি বেতনের আওতায় আনা হয়নি। বহু স্কুলে শিক্ষকেরা বেতন না পেয়ে এমপিওভুক্তি হবে আশায় বা প্রতিশ্রুতিতে বছরের পর বছর কাজ করে যাচ্ছেন। এই লেখা লেখার সময় এ রকম শিক্ষকেরাই অনশন করছেন প্রেসক্লাবের সামনে। মোট কলেজের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৫৭, এর মধ্যে সরকারি ৩২৯টি, মাত্র ৭ শতাংশ (ব্যানবেইস রিপোর্ট ২০১৬)। প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশের শিক্ষক, শিক্ষা সরঞ্জামের দুর্দশার কথা সর্বজনবিদিত।
বাণিজ্যিকীকরণ শিক্ষক নিয়োগকেও বিষাক্ত করেছে। দুর্নীতি আর অনিয়মের খবরের শেষ নেই। সরকারি দলের ছাত্র-যুব থেকে বড় নেতাদের দাপট তো আছেই। প্রকৃতপক্ষে অনেক শিক্ষক প্রতারিত, আবার কেউ কেউ শিক্ষক পরিচয় নিয়ে ক্ষমতার যোগাযোগে নানা সুবিধা নিচ্ছেন।কেন এ রকম নৈরাজ্য? কেন রাষ্ট্র শিক্ষা খাতকে এভাবে মুনাফার জগতে ঠেলে দিচ্ছে? টাকার অভাব? মোটেই না। শিক্ষা খাতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বরাদ্দ হলো জিডিপির ৬ শতাংশ এবং বাজেটের কমপক্ষে ২০ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে এই বরাদ্দ জিডিপির ২ শতাংশ এবং বাজেটের ১৫ শতাংশের আশপাশেই ওঠানামা করছে। বিভিন্ন দেশের জিডিপিতে শিক্ষা খাতের অনুপাত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১৬১টি দেশের মধ্যে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের দিক থেকে বাংলাদেশ ১৫৫তম। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান যুদ্ধতাড়িত আফগানিস্তান থেকেও অনেক কম। গত অর্থবছরে বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৯ শতাংশ, সেখানে তা ছিল আফগানিস্তানে ৪ দশমিক ৬, ভুটানে ৫ দশমিক ৬, নেপালে ৪ দশমিক ১, ভারতে ৩ দশমিক ৯, পাকিস্তানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ (সিপিডি-ক্যাম্পে: এডুকেশন বাজেট, জুন ২০১৬)।
প্রতিবছরের মতো এই অর্থবছরেও বলা হয়েছে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের কথা। আসল চেহারা উন্মোচিত হয় যখন আমরা দেখি এর সঙ্গে আছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ, যার জন্য আছে বড় বরাদ্দ, ১১ হাজার কোটি টাকা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কথা বললেও তা আসলে বিজ্ঞানশিক্ষা বা গবেষণার জন্য বরাদ্দ নয়, এই বরাদ্দের একটি বড় অংশ যাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে! বরাদ্দ মানেই বাস্তবায়ন নয়, বরাদ্দ মানেই তা শিক্ষা-অনুকূল নয়। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, বাজেট বরাদ্দ যা করা হচ্ছে, তার তুলনায় সংশোধিত বাজেট কমে যাচ্ছে। গত বছরই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক খাতে সংশোধিত বাজেটে কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। অথচ ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেলেই এমপিওভুক্তির দাবিতে ফুটপাতে অনশনকারী শিক্ষকদের দাবি পূরণ করা সম্ভব। অন্যদিকে ১৬৩টি স্কুলে এলিভেটর নির্মাণে সরকার ১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা খরচে রাজি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ বা শিক্ষকদের বেতনে রাজি নয়।
বাংলাদেশে শিক্ষা, চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় খাতে বরাদ্দের কথা বললেই সম্পদের অভাবের কথা বলা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে শতাংশের হিসাবে সম্পদ অনুযায়ীই ব্যয় করার কথা। সম্পদ কম হলে শতাংশের পরিমাণও হবে। অসুবিধা কী? কিন্তু বাংলাদেশে সামর্থ্যের তুলনায় ব্যয় অনেক কম শিক্ষা ও চিকিৎসায়, সামর্থ্যের তুলনায় ব্যয় অনেক বেশি সরকারের শানশওকতে, গাড়ি, ভবন আর কেনাকাটায়। বাংলাদেশের চেয়ে ছোট অর্থনীতি হয়েও পৃথিবীর বহু ‘গরিব’ দেশ অনেক বেশি অনুপাতে শিক্ষা খাতে ব্যয় করে শক্তিশালী ভিত্তি নির্মাণ করছে। শিক্ষা খাতকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বিকশিত করছে। (বিস্তারিত আলোচনার জন্য দেখুন সর্বজনকথা, আগস্ট-অক্টোবর ২০১৫ ও আগস্ট-অক্টোবর ২০১৭)
প্রকৃতপক্ষে সম্পদ বা জনবল কোনোটাই সমস্যা নয়। এর অভাব যদি থাকেও, তার সমাধান সম্ভব। সমস্যা হলো রাষ্ট্র বা সরকার বা নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষা খাতকে সর্বজনের জন্য সুলভ, বিকশিত, অভিন্ন মানসম্পন্ন করার কাজকে উন্নয়ন বলে মনে করেন না! শিক্ষাকে দোকানদারি অর্থনীতিতে পরিণত করাই উন্নয়নধারা হিসেবে তাঁদের কাছে গৃহীত। এ রকম রাষ্ট্রীয় নীতি-দর্শন অব্যাহত থাকায় তা ডালপালায় প্রস্ফুটিত হয়ে বর্তমান আকারে হাজির হয়েছে। বিদেশি ঋণনির্ভর প্রকল্প দিয়ে শিক্ষার কাঠামো সাজানো হয়েছে, স্কুল পর্যায়ে সৃজনশীল পদ্ধতির নামে কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে অপ্রস্তুত শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের, পরীক্ষার ভারে কাবু করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের, শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিণত করা হয়েছে পরীক্ষাব্যবস্থায়। আর তাতে যে ধরনের চাহিদা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করতেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য কোচিং সেন্টার, গাইড বই আর এদেরই সহযোগী প্রক্রিয়া হিসেবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চর্চা। শিক্ষার্থীদের প্রতিবছরের প্রথম দিনে বিনা মূল্যে যখন পাঠ্যবই দেওয়া হচ্ছে, তখন পাঠ্যবই চলে গেছে প্রান্তে, প্রধান পাঠ্য এখন গাইড বই। কোচিং সেন্টারগুলোর টিকে থাকা, ভালো ব্যবসা নির্ভর করে তা থেকে কতজন ভালো ফল দেখাতে পারে, কতজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে। সহজ পথ হিসেবে প্রশ্ন ফাঁস যখন শক্তিশালী সমর্থন পেয়েছে, তখন সেটাই সাফল্যের উপায় হিসেবে ভাইরাসের মতো দ্রুত ছড়িয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ জিডিপির শতকরা ৬ ভাগ করতে গেলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হবে বর্তমান বরাদ্দের প্রায় ৩ গুণ। যদি ২ গুণও করা হয়, আগামী কয়েক বছরে প্রতিটি অঞ্চলে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রয়োজনমাফিক প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, সম্মানজনক বেতন-ভাতা নিশ্চিত করা, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি, বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি, কম্পিউটার, মাল্টিমিডিয়াসহ সব শিক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ-সবকিছুই সম্ভব। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ এবং সব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিতে গেলে আরও কয়েক লাখ শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। এর ফলে আজ যাঁরা কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট টিউশনি ইত্যাদিতে নিয়োজিত, তাঁরা সবাই চাইলে নিশ্চিত ও সম্মানজনক কাজ হিসেবে শিক্ষকতা করতে পারবেন। নিজেদের টিকিয়ে রাখতে প্রশ্ন ফাঁস আর গাইড বই ব্যবসার মধ্যে যেতে হবে না কাউকে।
কিন্তু বর্তমান ধারায় সরকারকে সন্তুষ্ট দেখা যায়-পরিসংখ্যানে পাসের হার বেড়েছে, জিডিপি বেড়েছে। আর্থিক লাভ হয়েছে নানা গোষ্ঠীর, শুধু শিক্ষারই ঘটেছে বিপর্যয়। শিক্ষার্থীদের আপাতত লাভ দেখা গেলেও দীর্ঘ মেয়াদে তাদেরই হয়েছে সমূহ সর্বনাশ। দেশের সর্বনাশ আর কত দূর বাকি থাকে?
[৪ জানুয়ারি ২০১৮, দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত]