বাংলাদেশ কীভাবে চলছে, কীভাবে চোরাই কোটিপতি তৈরি হচ্ছে, কারা এই দেশ পরিচালনা করছে, রাজনৈতিক ক্ষমতার সঙ্গে অর্থনীতি কীভাবে যুক্ত হচ্ছে, কীভাবে দখলদার, লুটেরা ও সন্ত্রাসীরা ধনিকগোষ্ঠী তৈরি করছে, রানা প্লাজা আর তার মালিকের ইতিহাস সেটাই স্পষ্ট করে দেখায়। রানা প্লাজা একটি দখলকৃত নীচুজমির ওপর নির্মিত, যা সকল বিধিমালা অগ্রাহ্য করে নির্মাণ করা হয়েছে। ছয় তলার ফাউন্ডেশন থাকলেও নির্মাণ করা হয়েছে বেশি। গার্মেন্টস কারখানা স্থাপনের মতো পরিবেশ না থাকলেও তা করা হয়েছে। লুটেরা, দখলদার, সন্ত্রাসী; এ তিনটির সমাবেশ রানা, রাজনৈতিক ক্ষমতা তার সঙ্গেই যুক্ত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাই চরম নির্বোধ ও দায়িত্বহীনের মতো কথামালা দিয়ে, বিজিএমই ও সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তা সহযোগে প্রথম থেকেই এই খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। জনরোষ ও জনপ্রতিরোধ সরকারকে বাধ্য করেছে দুর্বত্তদের গ্রেফতার করতে।
গত ২০ বছরে অনেক গার্মেন্টস কারখানায় আগুনে পুড়ে, ভবন ধ্বসে ও পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছে অসংখ্য শ্রমিক। পুলিশের গুলি, সন্ত্রাসীদের ধর্ষণ ও নির্যাতনেও খুন হয়েছেন অনেকে। আমরা জানি বিশ্বে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি সর্বনিম্ন। আর এসব হত্যাকান্ড আর তারপর সরকারের ভূমিকা থেকে বোঝা যায় এই শ্রমিকদের জীবনের দামও সর্বনিম্ন। যে শ্রমিকেরা বৈদেশিক মুদ্রা এনে দেশে ডলারের পাহাড় তৈরি করছেন, শুধু দেশী মালিক নয়, বিদেশী বায়ার -স্টোর- রাষ্ট্র ইত্যাদিরও মুনাফা নিশ্চিত করছেন তারা, আর তাদের কারখানাই তাদের জন্য পরিণত হয়েছে মৃত্যুকূপে।
রানা প্লাজার ঘটনা একইরকম আরেকটি ঘটনার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়। ওই সময় ক্ষমতায় ছিল চারদলীয় জোট সরকার। ৮ বছর আগে এই একই মাসে, ২০০৫ সালের ১১ এপ্রিল গভীর রাতে সাভারে স্পেকট্রাম বহুতল ভবন ধ্বসে পড়ে। তখন রাত ১টায় ঐ ভবনের বিভিন্ন তলায় গার্মেন্টস শ্রমিকেরা, যাদের অধিকাংশই ছিলেন নারী, কাজ করছিলেন। কত মানুষ নিহত হয়েছিলেন তার যুক্তিগ্রাহ্য কোনো হিসাব কখনোই পাওয়া যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সংখ্যাটি শতাধিক। তবে এর পরও নিখোঁজ ছিলেন অনেকে। তড়িঘড়ি উদ্ধারকাজ শেষ করা হয়। ত্রুটিপূর্ণ ভবনে কারখানা স্থাপনের জন্য ঐ ভবনের মালিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তালিকা অসমাপ্ত বলে নিহত আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণও ঠিকভাবে পরিশোধ হয়নি। ভবন ও কারখানা নিরাপদ করবার জন্য পরবর্তীতে সরকার বা বিজিএমইএও কোনো কার্যকর ধারাবাহিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন লেগে কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী শতাধিক শ্রমিক প্রাণ হারালেন। ওই ঘটনায়ও এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। সে মালিকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নিহত বা আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার যথাযথ বিধিমালা প্রণয়ন ও তা কার্যকর করা হয়নি।
সর্বশেষ গত ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধ্বসে পড়লো, যেখানে কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানায় প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক কাজ করছিলেন। ২৩ এপ্রিল ভবনে বৃহৎ ফাটল দেখা দেয়ার পর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বন্ধ করে দেয়াই সঙ্গত ছিলো। কিন্তু লোভ ও যথেচ্ছাচার করবার ক্ষমতায় অন্ধ ভবন ও গার্মেন্টস মালিকরা ঐ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই শ্রমিকদের কাজে আসতে বাধ্য করেছেন। শ্রমিকদের ভয় দেখানো হয়েছে, কাজে না এলে চাকুরি যাবে বা তিনদিনের মজুরি কেটে রাখা হবে। শ্রমিকেরা যে আয় করেন তাতে তিনদিনের মজুরি কাটা যাওয়া বা কাজ হারানোর ভয় তাদের জন্য বিরাট হুমকি। তাই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই তারা কাজে যোগ দিতে এসেছেন এবং তারা ভবনে ঢোকার পরই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সদর দরজা। এটাকে হত্যাকান্ড ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত রানা প্লাজা ও সেখানে অবস্থিত গার্মেন্টস কারখানার মালিক। এর ক্ষেত্র তৈরি করেছে শ্রম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দায়িত্বহীনতা, ভুল নীতি ও নানাপর্যায়ের দুর্নীতি। রানা প্লাজার এই ভয়াবহ ঘটনা থেকে আবারো স্পষ্ট হয়েছে যে, একদিকে মালিকপক্ষের সীমাহীন লোভ আর রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং অন্যদিকে রাষ্ট্রের উপর্যুপরি দায়িত্বহীনতাই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
এমন দুর্ঘটনা ঘটলে তদন্ত কমিটি গঠন ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের কথা শোনা যায়। অনেক ক্ষেত্রে এসব প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়, তা অতি তুচ্ছ। নির্দিষ্ট নিয়মকানুন না থাকায় যতটুকুর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়, সেটুকুও সবার কাছে পৌঁছায় না। তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশ পরিবার এখনও প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ক্ষতিপূরণও পাননি।
একজন মানুষ মৃত্যু বরণ করলে কোনোকিছু দিয়েই তার ক্ষতিপূরণ হয় না। কিন্তু বিদ্যমান আইন অনুযায়ীও যেটুকু ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা, এমনকি যতটুকু প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে সেটি দিতে মালিককে বাধ্য না করায়, এমন হত্যাকাণ্ডের জন্য যারা দায়ী তাদের বিচারের ব্যবস্থা না করায়,- সর্বোপরি পুরো গার্মেন্টস শিল্পের ন্যুনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দাঁড় না করানোর ফলে এসব ঘটনা উপর্যুপরি ঘটছে। বিদ্যমান ‘চরম দুর্ঘটনা আইন’ অনুযায়ী, মালিকের অবহেলা বা অনিয়মের কারণে একজন শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হলে, বাকি জীবনে যে টাকা আয় করা তার পক্ষে সম্ভব হতো, এর দ্বিগুণ দিতে হবে ক্ষতিপূরণ হিসেবে। এই ঘটনায় যেসব শ্রমিক নিহত হয়েছেন, তাদের বয়স ১৬-২৫ এর মধ্যে। গড় আয়ু অনুযায়ী হিসেব করলে তারা অন্তত আরো ৪০ বছর কাজ করতে পারতেন। মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়েও, মাসিক ৫ হাজার হিসেবে তাদের বাকি জীবনে সম্ভাব্য আয় প্রায় ২৪ লাখ টাকা। সুতরাং বিদ্যমান আইন অনুযায়ীই নিহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণের অর্থ হওয়া উচিত কমপক্ষে ৪৮ লাখ টাকা। একথা শুনে মালিক বা সরকার পক্ষের লোকজন বলতে পারেন, এটি অসম্ভব একটি প্রস্তাব। কিন্তু এটা বিদ্যমান মালিকপক্ষের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট আইনেরই কথা। এই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ যদি মালিকের কাছে আদায় নিশ্চিত করা সম্ভব হতো, অবহেলার জন্য শাস্তিবিধান করা যেত, তাহলে এমন ঘটনা নিশ্চয়ই কমে আসতো।
রানা প্লাজায় ২৪ এপ্রিল ঘটনার পর থেকেই উদ্ধারকাজ চলছে। মৃত্যুর ঘোষিত সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি এখনও নিখোঁজ আছেন সহ¯্রাধিক। গত কদিন ধরে যারা উদ্ধারকাজে এখন পর্যন্ত প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন তাঁরা হলেন এলাকার ‘সাধারণ’ মানুষ – রাজমিস্ত্রী, কাঠমিস্ত্রী, যোগালী, মেকানিক, ড্রাইভার, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, কারখানা মজুর, দোকানদার, শিক্ষার্থী, পেশাজীবী। নিজের হাত পা, হাতুড়ি, শাবল আর কাচি দিয়ে তাঁরা অসাধ্য সাধন করেছেন। বাংলাদেশে যেকোনো দুর্যোগে প্রয়োজনে মানুষের এই স্বতস্ফূর্ত সাড়া অমূল্য। এছাড়া ফায়ার ব্রিগেড ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছেন। ২৬ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায়, তাঁদেরকে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। যদি ফায়ার ব্রিগেডের যথাযথ যন্ত্রপাতি আর জনবল থাকতো, যদি প্রথম দিন থেকে সমন্বিত ও যথাযথভাবে ভাবে সেনাবাহিনীর বিদ্যমান ক্ষমতা, প্রযুক্তি ও জনবল ব্যবহার করা হতো তবে হতাহত আরও কম হতো। সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাশেই ছিল। এখানে তাদের প্রযুক্তি ও জনবলগত প্রাচুর্য আছে, প্রশিক্ষণ আছে। প্রথমদিন থেকেই তাদের ব্যাপকভাবে মোতায়েন করা গেলে ক্ষতিটা কমে আসত।
স্পেকট্রামে ধ্বস, তাজরীনে অগ্নিকান্ড, রানা প্লাজা ধ্বস সব ঘটনার পরই খেয়াল করি, সরকারের ভূমিকা কীভাবে মালিককে রক্ষা করতে ব্যস্ত, এবং একইকারণে কী নিদারুণ ভাবে শ্রমিক স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কে নির্লিপ্ত এবং প্রায়শই তার প্রতিপক্ষ। দেশে প্রায় ৫ হাজার গার্মেন্টস কারখানা আছে। রয়েছে অন্য কারখানাও। বাংলাদেশে কারখানা পরিদর্শকের সংখ্যা এখনও হাতে গোণা। কোথায় কারখানা নির্মাণ হচ্ছে, তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন- এসব তদারকি রাষ্ট্র তার দায়িত্বের মধ্যেই রাখেনি। এটা ছেড়ে দেয়া হয়েছে মালিকের সীমাহীন লোভ ও স্বেচ্ছাচারিতার হাতে। অন্যদিকে এখন কনস্ট্রাকশন বুম হচ্ছে বাংলাদেশে। বিভিন্ন স্থানে তৈরি হচ্ছে বিশাল ভবন, দেখা যাচ্ছে ‘উন্নয়নের’ জৌলুস। জমি দখল হচ্ছে, ইচ্ছামতো তাতে ভবন নির্মিত হচ্ছে, বিধিবিধান কেনাবেচা হচ্ছে। দুর্ঘটনা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, জনবল ও প্রযুক্তি অগ্রাধিকার পায়নি। সক্ষমতা ও সমন্বয় থাকলে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো কঠিন ছিল না।
সারাদেশে বেড়েছে দালান-কোঠা। বাড়ছে ভূমিকম্পের শঙ্কা। তারপরও কোনো সরকার এ খাতে কোনো যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ বা উদ্যোগ গ্রহণ করে নি। বিল্ডিং কোড বা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা- কোনো ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই কোনো সরকারের। মন্ত্রী, এমপি ও আমলাদের জন্য নিত্যনতুন গাড়ি, অস্ত্র ক্রয়, বিদেশ সফর প্রভৃতিতে সরকারের টাকার অভাব হয় না। হলমার্কসহ শেয়ারবাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়, অথচ লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন এবং অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি যেখানে জড়িত, তুলনামূলক কম টাকা দরকার হলেও সেখানে নিরাপত্তা বাড়াতে বরাদ্দ দেয়া হয় না। এরপর আছে লুটেরা সন্ত্রাসীদের ক্ষমতার ঔদ্ধত্য। সেজন্যই আজ অসম্ভব ক্ষোভ ও ক্রোধ নিয়ে নিরীহ মানুষের লাশের সারি আর অসংখ্য মানুষের আহাজারি দেখতে হচ্ছে।
রানা প্লাজার এই শ্রমিক গণহত্যার ঘটনা আবারো প্রকাশ করছে রাষ্ট্রের স্বরূপ, ক্ষমতার সম্পর্ক, পুঁজির পুঞ্জিভবনের নির্মম প্রক্রিয়া। মালিকদের সংগঠন আছে, সেখানে তৈরি হয়েছে দলনির্বিশেষে শক্তিশালী শ্রেণী ঐক্য। বিজিএমইএ ভবনটি তাদের সম্মিলিত ক্ষমতা ও দুর্নীতির প্রতীক। এই প্রতিষ্ঠানই অপরাধী মালিকদের আশ্রয়। পাশাপাশি শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ কোনো সাংগঠনিক শক্তি নাই। মালিকদের মতো তাদের সঙ্গে সরকারের প্রতিষ্ঠান, থানাপুলিশ নাই। নিজেদের শক্তি ও ঐক্য ছাড়া আর কোনো অবলম্বন বা ভবিষ্যৎ শ্রমিকদের নাই।
শ্রমিকদের স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনের চাপ সৃষ্টির কারণে সরকার ভবন ও গার্মেন্ট মালিককে গ্রেফতার করেছে। এই মুহূর্তে শ্রমিকদের পাশে যে দাবিগুলো নিয়ে সকলের জমায়েত হওয়া কর্তব্য সেগুলো হল: প্রথমত. গার্মেন্টসশিল্পে অগ্নিকাণ্ডে ও ভবন ধ্বসে দায়ীদের এতোদিন যেভাবে ছাড় দেয়া হয়েছে, এর সব প্রক্রিয়া বন্ধ করে তাদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। রানা প্লাজার ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে আইনের ফাঁকফোকড় বন্ধ করতে হবে। লুন্ঠন ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত তাদের সম্পদ বাজেয়াফত করে নিহত শ্রমিকদের পরিবার ও আহতদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত. চরম দুর্ঘটনা আইনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারবর্গকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট স্থানে প্রকাশ্যে এই ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করতে হবে। আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত. সকল কারখানা জরিপকাজ অবিলম্বে শেষ করতে হবে। যেসব ভবন অনুপযুক্ত, যেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই সেগুলো দ্রুত বন্ধ করে দিয়ে সেসব গার্মেন্টস অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে। চতুর্থত. ফায়ার সার্ভিসসহ যেসব প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কাজ করে তাদের জনবল ও সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদান করতে হবে। কারখানা এলাকায় চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখতে হবে। এই কাজগুলো করতে হবে খুব দ্রুত।
স্পেকট্রাম ভবনের মতো এখানকার উদ্ধারকাজ হঠাৎ করে সমাপ্ত ঘোষণা আর মৃতের সংখ্যা কম দেখানোর প্রবণতার এবারও ছিলো। অব্যাহত নজরদারির কারণে তার পুরোটা সফল হয়নি। এখন নিশ্চিত করতে হবে যে, যথাযথ বিচার হবে; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বিজিএমইএ ও মালিকপক্ষ বহন করবে। এসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। এক্ষেত্রে গাফিলতি করলে এই গণহত্যার পুরো দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে। প্রতারণা, প্রহসন করে বা প্রলাপ বকে এর থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে না।।
(মে ০১,২০১৩ তারিখে আমাদের বুধবার এ প্রকাশিত)