পুঁজিবাদ বিকাশের ‘বাংলাদেশ মডেল’

গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটেছে সর্বক্ষেত্রে। গত দু’দশকে এর বিকাশ মাত্রা দ্রুততর হয়েছে, সন্দেহ নেই। বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে অঙ্গীভূত, বিশ্বায়িত; অনেক বেশি বাজারিকৃত। পুঁজির আধিপত্য অর্থাৎ মুনাফা ও বাজারকে লক্ষ্য করে উৎপাদনসহ নানা অর্থনৈতিক তৎপরতা আগের যে কোনো সময়ের চাইতে বেশি। এই ধারায় গত কয় দশকে জাতীয় আয়, খাদ্য, মৎস্য, সবজিসহ কৃষি উৎপাদন, গার্মেন্টসহ শিল্প উৎপাদন, মোবাইল ব্যাংকিংসহ আর্থিক খাত, ইন্টারনেটসহ পরিষেবা খাত বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। নগরায়ণ, জৌলুস, যোগাযোগ বেড়েছে। পাশাপাশি দারিদ্র্য, বৈষম্য, নিরাপত্তাহীনতার ক্ষরণ চলছেই; সম্পদের কেন্দ্রীভবন, দখল, লুণ্ঠন, চোরাই টাকার দাপট শুধু অর্থনীতি নয়, রাজনীতি সমাজকেও শৃঙ্খলিত করে রেখেছে। গত কয়েক দশকে পরিবর্তন ঘটেছে বহু রকম; সম্ভাবনা, নৈরাজ্য, সংকট সবকিছুই এর মধ্যে পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশে পুঁজিবাদের বিকাশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশে ৭০ দশকের শুরুতে প্রকাশিত একটি বইয়ের কথা টানা হয়, নাম ‘বাংলাদেশ :এ টেস্ট কেস অব ডেভেলপমেন্ট’। এর লেখক ছিলেন ১৯৭২-৭৪ সালে ঢাকার বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি জাস্ট ফাল্যান্ড এবং একই সময়ে ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ জে. আর. পারকিনসন। এই গ্রন্থে স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশ নিয়ে গভীর হতাশা ব্যক্ত করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের দর্শন অনুযায়ী তারা পুঁজিবাদ বিকাশের সম্ভাবনাই বিচার করেছিলেন। তাদের বক্তব্যে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের এমনই অবস্থা যে, যদি বাংলাদেশের উন্নয়ন হয় তাহলে বিশ্বের কোথাও উন্নয়নে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু এ রকম হতাশা জনগণের মধ্যে প্রধান ছিল না। মুক্তিযুদ্ধকালে ও স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে হতাশার বদলে ছিল বিপুল প্রত্যাশা। এই প্রত্যাশার প্রতিফলন আছে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দলিলে। বস্তুত প্রথম থেকেই প্রত্যাশার বিপরীতে রাষ্ট্রের যাত্রা শুরু হয়। এই বৈপরীত্য নিয়ে সে সময়ের অন্য আরও বই আছে, যেগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তৎকালীন পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান নূরুল ইসলাম এবং সদস্য রেহমান সোবহান ও আনিসুর রহমানের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা বই।

যদি আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্নেষণ করি; যদি মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী জনগণের প্রত্যাশা বিবেচনা করি; যদি স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রে যে তিনটি লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল সেই সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা- বর্তমান উন্নয়নধারায় কতটা অর্জিত হয়েছে তার বিচার করি, তাহলে উচ্ছ্বাসের বদলে উন্নয়নের গতিধারা নিয়েই প্রশ্ন আসবে।

জিডিপি ও মাথাপিছু আয় পরিমাপের সীমাবদ্ধতা :নানা প্রশ্ন থাকলেও উন্নয়ন পরিমাপে জিডিপি হিসাবই এখন পর্যন্ত প্রাধান্যে। সরকারি হিসাবে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন বার্ষিক ২৫০০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ১০ বছরের গড় হিসাবে বিশ্বের সবচাইতে উচ্চহারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঘটেছে নাওরু, ইথিওপিয়া, তুর্কমেনিস্তান, কাতার, চীন ও উজবেকিস্তানে। বাংলাদেশের চাইতে বেশি, সমান ও কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি হার অর্জনকারী অন্য দেশগুলো হলো- ইথিওপিয়া, মিয়ানমার, ভারত, কম্বোডিয়া, তানজানিয়া, লাওস, ফিলিপাইন, আইভরি কোস্ট ও সেনেগাল।

একটি দেশে জিডিপি বেশি হলেও যে টেকসই উন্নয়ন দুর্বল হতে পারে; মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেলেও যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনযাত্রার মান নিম্ন হতে পারে- এ বিষয় স্পষ্ট করে অনেক গবেষণামূলক কাজ হয়েছে নানা দেশে। অমর্ত্য সেন এ বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, মাহবুবুল হকের সঙ্গে ‘মানব উন্নয়ন সূচক’ ধারণা প্রবর্তন করেছেন। জোসেফ স্টিগলিজসহ মূলধারার বহু অর্থনীতিবিদও অর্থনীতি পরিমাপের পদ্ধতি হিসেবে জিডিপি ব্যবহারের সার্থকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। প্রকৃতপক্ষে জিডিপি দিয়ে একটি দেশের আর্থিক লেনদেন বা বাণিজ্যিক উৎপাদন, বিতরণ, পরিষেবার বিস্তার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। কারণ, যে কোনো লেনদেন ও বাণিজ্যিক তৎপরতা বৃদ্ধিতেই জিডিপি বাড়ে। কিন্তু এর জন্য সামাজিক, মানবিক ও পরিবেশগত কোনো ক্ষতি হলে তা হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। সে কারণে এর মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বোঝা যায় না; সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষতি তাতে ধরা পড়ে না; অর্থনীতির গুণগত অগ্রগতিও বোঝা যায় না।

যেমন চোরাই অর্থনীতির তৎপরতাতেও জিডিপি বাড়ে। কিন্তু সমাজের বড় একটা অংশের জীবন-জীবিকা তাতে বিপদগ্রস্ত হয়। নদী-নালা, খালবিল, বন দখল ও ধ্বংসের মাধ্যমেও জিডিপি বাড়তে পারে। কিন্তু তা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে না, বরং অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও তার কারণে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বড় দেখায়, জিডিপির অঙ্ক বাড়ে। এসব তৎপরতায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি পায় না বরং জীবনমান বিপর্যস্ত হয়। শিক্ষা ও চিকিৎসার বাণিজ্যিকীকরণ এর ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জিডিপি বাড়ায়। কিন্তু তাতে বেশিরভাগ মানুষের বঞ্চনা বাড়ে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে গৃহীত বৃহৎ প্রকল্পে ব্যয়ের লাগামহীন বৃদ্ধি, আর্থিক খাত থেকে অভাবনীয় মাত্রায় লুণ্ঠন ও পাচারও জিডিপি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এর সবকিছুই আমরা বাংলাদেশে দেখছি।

ধনিক শ্রেণি গঠনের ধরন :বাংলাদেশে পুঁজিবাদ বিকাশ প্রক্রিয়ায় ধনিক শ্রেণি গঠনের প্রথম পর্বে ছিল লাইসেন্স, পারমিট, চোরাচালানি, মজুদদারি, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকারখানার সম্পদ আত্মসাৎ ইত্যাদি। দ্বিতীয় পর্বে এর সঙ্গে যোগ হয় ব্যাংক ঋণ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের মালিকানা লাভ। ব্যাংক ঋণের সুবিধা বাড়ে, ঋণখেলাপিও বৃদ্ধি পায়। আশির দশকের শুরুতেই ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকের যাত্রা শুরু এবং অনেক ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের ঋণখেলাপিদেরই নতুন ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকের মালিক হিসেবে দেখা যেতে থাকে। বস্তুত বাংলাদেশে ৮০-এর দশক ছিল নব্য ধনিক শ্রেণির ভিত্তি সংহত করার খুবই সুবর্ণ সময়। একদিকে স্বৈরাচারী শাসন, অন্যদিকে ‘কাঠামোগত সমন্বয় কর্মসূচি’র অধীনে সংস্কার কর্মসূচিতে ব্যক্তি-গোষ্ঠীর কাছে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হস্তান্তরের নীতিমালার চাপ নব্য ধনিকদের জন্য খুবই অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এডিবির নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ব্যাংক ও থিঙ্কট্যাঙ্ক বাংলাদেশের উন্নয়নধারার মূল পথপ্রদর্শক ছিল বরাবরই। বর্তমান বাংলাদেশেও তাদের মতাদর্শই উন্নয়ন পথ ও পদ্ধতি নির্ধারণ করছে।

দুর্নীতি-লুণ্ঠন-ক্ষমতার কেন্দ্রীভবনের যে ভিত্তি আশির দশকে নির্মিত হয়, তা দিনে দিনে আরও শক্ত হয়েছে। কেননা, সেই সময় বিন্যস্ত শাসন-দুর্নীতির পথেই পরবর্তী সরকারগুলোও অগ্রসর হয়েছে। তাই একদিকে দুর্নীতির শত হাত-পা বিস্তার এবং অন্যদিকে সম্পদ ও ক্ষমতায় কেন্দ্রীভবন দুটোই ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। গত এক দশকে আমরা প্রবেশ করেছি পুঁজি সংবর্ধনের তৃতীয় পর্বে, যখন ব্যাংক ঋণের মধ্যে সম্পদ লুণ্ঠন সীমিত নেই। আকাঙ্ক্ষা এবং সুযোগ দুটোই এখন অনেক বেশি। শুধু ব্যাংক বা শেয়ারবাজার নয়, সর্বজনের (পাবলিক) সব সম্পদই এখন এই শ্রেণির লক্ষ্যবস্তু।

মুনাফার পাহাড়, প্রাণ-প্রকৃতির বিপর্যয় : পুঁজি সংবর্ধনের বিদ্যমান ধারায় বাংলাদেশে প্রাণ-প্রকৃতির অভূতপূর্ব বিপর্যয় ঘটেছে। সামাজিক পরিবেশগত ফলাফল এবং জনস্বার্থ বিবেচনা না করে চটজলদি মুনাফার লক্ষ্যে সব তৎপরতা পরিচালনা বিদ্যমান উন্নয়ন দর্শনে যৌক্তিক। অতীতে নদী-নালা, খালবিল নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করে শত হাজার কোটি টাকার ‘উন্নয়ন’ প্রকল্প করা হয়েছে। এখন দেখছি এর ফল- স্থায়ী জলাবদ্ধতা, নদীভাঙন এবং পরিবেশ বিপর্যয়। দ্রুত মুনাফার লক্ষ্যে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ওষুধ, কৃত্রিম রং ব্যবহারের ফলে পানিদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এর বিষ প্রভাব পড়েছে মৎস্য, বৃক্ষ, তরুলতাসহ জীববৈচিত্র্যের ওপর। উৎপাদন বেড়েছে কিন্তু নিরাপদ পানি ও খাদ্য বড় ঝুঁকির মধ্যে পতিত।

গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে জিডিপি যে বহুগুণ বেড়েছে, তার হিসাব আমাদের কাছে আছে। একই সময়ে বাংলাদেশের প্রাণ নদী-নালার কতটা জীবনহানি ও জীবনক্ষয় হয়েছে, তার ক্ষতির কোনো পরিসংখ্যানগত হিসাব আমাদের কাছে নেই। ‘উন্নয়ন’ নামে পুঁজি সংবর্ধনের উন্মাদনার সর্বশেষ শিকার সুন্দরবন, যাকে বলা যায় বাংলাদেশের সর্বশেষ প্রাকৃতিক বন। সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থান অতুলনীয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে কোটি কোটি মানুষের অবলম্বন এই বন। তার ওপরই সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করতে উদ্যত রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রকল্প।

বস্তুত বাংলাদেশের জিডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির পেছনে বড় অবদান হচ্ছে প্রবাসী আয়ের। এ ছাড়া আছে শিল্প এবং কৃষি। অথচ এই তিন ক্ষেত্রে যুক্ত শ্রমজীবী মানুষের আয় এবং জীবনের নিরাপত্তা দুটিই ঝুঁকিপূর্ণ, অনিশ্চিত। জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে তাদের অবদান মুখ্য হলেও এতে তাদের অংশ ক্রমেই কমছে। একই সঙ্গে দেশে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ক্রমাগত নিম্নমুখী।
বিভিন্ন ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি অনিয়ন্ত্রিত হলেও শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে বাংলাদেশের বরাদ্দ বিশ্বে নিচের সারিতে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে, জিডিপি অনুপাতে, বিশ্বের অধিকাংশ দেশের এমনকি প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের আনুপাতিক হারে ব্যয় কম। ফলে সর্বজন প্রতিষ্ঠানের বিকাশ সংকটগ্রস্ত, লাখো শিক্ষকের জীবনও বিপর্যস্ত। শিক্ষা খাতও এখন কিছু লোকের খুব দ্রুত টাকার মালিক হওয়ার জায়গা। চিকিৎসা খাতের অবস্থাও তাই। শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে তাই একদিকে জৌলুস বাড়ছে, অন্যদিকে মানুষের ওপর বোঝাও বাড়ছে। সরকারি সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ৫ কোটি ৮১ লাখ। এর মধ্যে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ৮৭ শতাংশ। স্বনিয়োজিত মানুষের সংখ্যাই ২ কোটি ৩৬ লাখ। এসব ক্ষেত্রে কাজের কোনো স্থিরতা নেই, আয় তুলনামূলক অনেক কম, নিরাপত্তাও কম। করোনাকালে নতুন দরিদ্র তৈরি হয়েছে প্রায় ৩ কোটি মানুষ।
মডেলের অঙ্গ : বাংলাদেশে পুঁজিবাদ বিকাশে একদিকে প্রাণ-প্রকৃতি পরিবেশ বিপর্যয়ের, অন্যদিকে নজরদারি ব্যবস্থার অভূতপূর্ব বিস্তার ঘটেছে। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার প্রান্তস্থ একটি দেশে পুঁজিবাদ বিকাশের এই পর্বে সর্বক্ষেত্রে বাজার সম্পর্কের বিস্তার ঘটেছে অভূতপূর্ব হারে। ঘুষ, কমিশন, নিয়োগ বাণিজ্য, আটক বাণিজ্য সবই বর্ধনশীল। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই আর্থিক লেনদেন প্রক্রিয়া খুব শক্তিশালী। বিচার, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা নির্বাসিত। দখল, লুণ্ঠন অবারিত। একদিকে নগ্ন মুনাফার আগ্রাসন, অন্যদিকে নাগরিকদের ওপর ডিজিটাল নজরদারি সম্প্রসারণ এবং হাত মোচড়ানো স্বাধীনতা, বিভিন্ন পক্ষের অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা- সবই বর্তমান পুঁজিবাদ বিকাশের মডেলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

[১৮ নভেম্বর ২০২১, দৈনিক সমকালে প্রকাশিত]